image1 image3

HELLO I'M T R NAYAN|WELCOME TO MY PERSONAL BLOG|I LOVE TO DO CREATIVE THINGS|I'M NOW STUDING

অবাস্তব প্রেম কাহিনী

(আজকের এই দিনে তাকে নিয়ে লিখা )
অবাস্তব প্রেম কাহিনী:
-TR Nayan Bd.
.
.
কলেজের প্রথম দিনটি যে তাদের এভাবে শুরু হবে ভাবতেও পারে নি কেউ। প্রথমদিনই ক্লাশে দেরী করে ফেলেছিল নীল।
.
ক্লাশে ঢুকতেই স্যার বলেন, ‌`You are so late,Mr.`..!
.
সবার নজর তখন নীল-এর দিকে। একটি মেয়ে তখন দরজার পাশেই সামনের ব্যাঞ্চেই বসা ,ফিক করে হেসে দেয়। 
সবাই যখন স্যারের কথায় ভয়ে ভয়ে আছে। এই মেয়েটির হাসির রহস্য তখন ও বুঝে উঠতে পারে নি নীল। যেন কোনো ভুত দেখেছে।
.
প্রথমে মেয়েটির উপর খুব রাগ হয়েছিল। কিন্তু ক্লাশ শেষে সেই মেয়েটি যখন তার পাশে গিয়ে তাকে বলে যে, "কানে সাবান লেগে আছে।"
.
অানমনে হেসে দেয় নীল। আসলে সকালে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এমনটা হয়েছে।
.
তাদের প্রথম বন্ধুত্বটা এখানেই শুরু। আসলে মেয়েটি সহজেই যে কারো সাথে মিশতে পারে। আবার ছেলেটি এতদিন পর মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে ভয় ও লাগছে। তবুও কি মনে করে বন্ধুত্বের হাত বাড়ালো নীল। সেদিন তার নাম জানা হয় নি। তবে তার বান্ধবীরা তাকে ‌'অবনী' বলে ডেকেছিল।
.
'অবনী' । নামটা খুব সুন্দর লাগে নীলের। মনে হয় যেন অনেকদিনের চেনা সে।
.
ধীরে ধীরে খুব ভাল বন্ধু হয়ে যায় তারা। একজন আরেকজনকে পড়াশোনায় হেল্প করতে থাকে। দুজনই ডিসকাস করে পড়তে খুব ভালবাসে। আরেকদিকে ছেলেটি লাজুক টাইপের ছিল বলে সবাই তার বন্ধু হতে চাইতো না। কিন্তু 'অবনী' তাকে এত ভাল বন্ধু ভাববে। সে কল্পনাও করে নি। যে ছেলে মেয়েদের সাথে কথা বলতে ভয় পেতো। আজ 'অবনী' তাকে শিখিয়েছে মেয়েরা ভয়ের কিছু নয়। বন্ধু হলে এখানে ভয়ের কি আছে?
কিন্তু তারা একবার ও একজন আরেকজনকে তুই করে বলতে পারে নি কখনোও।
.
তাদের বন্ধূত্বটা তুমিতেই সীমাবদ্ধ ছিল। মাঝে মাঝে অবনী যখন খুব রাগ করতো। নীল তখন সামনে কোনো পানির গ্লাস থাকলে 'অবনী'র মাথায় ঢেলে দিত। তারপর আর কি! দুজনেই হেসে উঠতো।
একবার তো 'অবনী'র মাথায় কোক ঢেলে দিয়েছিল । 
এইতো সেদিনের রাগটা একটু বেশীই ছিল। অন্য মেয়েরা এসে নীলের সাথে কথা বলছিল। অবনী যেন ছিলই না সেখানে।  তাই ৩ দিন কথা না বলেও ছিল।খুব রাগী মেয়েটা। আসলে তাকে রাগাতে খুব ভালো লাগে নীলের। 
.
তারা দু'জনই একসময় বুঝতে পারে যে,তারা একে অপরকে ভালবাসে। কিন্তু বন্ধুত্ব নষ্ট হবে বলে তারা ভয়ে কখনই বলে না। বন্ধু হিসেবেই ভালবেসে যায়।
.
এদিকে তাদের পড়াশোনাও প্রায় শেষ পথে। হঠাৎ করে, নীল অবনীর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। Avoid করতে শুরু করে।
.
অবনী কিছুই বুঝতে পারে না। কেন সে এমন করছে?
.
নীল ঠিক করে অবনীকে আজ সব বলবে।
নীল অবনীকে সেই পুকুরপাড়ে দেখা করতে বলে। যেখানে তারা প্রায়ই দেখা করত। কিন্তু ..
আজ অবনী একাই সেখানে অপেক্ষা করছে।
ছেলেটা কথা দিয়েও আজ আসে নি। খুব রাগ হচ্ছে তার। ফোনটাও বন্ধ। রাগ করে চলে আসে হোস্টেলে। হোস্টেলে এসে জানতে পারে নীল হাসপাতালে। হঠাত প্রচুর মাথা ব্যাথা শুরু হয়, তাই জরুরিভাবে তাকে ICU তে নেয়া হয়েছে। ডাক্তার এখনোও রিপোর্ট দেয়নি। দুপুরে দিবে।
.
অবনী ছুটে যায় হাসপাতালে। গিয়ে জানতে পারে নীলের 'ব্রেন টিউমার'। অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে।
.
দু'দিন এর মধ্যে তার অপারেশন করতে হবে। তবে খুব রিস্ক। তাকে বাচানো গেলেও হয়তো সে তার স্মৃতিশক্তি হারাতে পারে। অথবা মারাও যেতে পারে।



নীলকে ICU তে নেয়া হয়।
.
নীলকে বাচানো সম্ভব হয় নি। নীল মারা যায়।
সবকিছুই বদলে যায়। সবাই সব ধীরে ধীরে ভুলে যায়।
বাস্তব থেকে অবাস্তব এ হারিয়ে যায় সব।
..
.
.
এরপর-
হয়ত অবনীর বিয়ে হয়ে যেত।
হারিয়ে যেত এক ভালবাসা।



.. ......নাহ্ হয়তো, গল্পটি এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু, হয়নি। কারণ,গল্পের শেষটা এভাবে উপরওয়ালা লিখেন নি ।
.
.
"ডাক্তাররা কি জানে?? এই নীল সেই নীল যাকে বারবার মৃত্যু স্পর্শ করলেও তাকে কেড়ে নিতে পারে নি। "
.
.
হ্যা,
নীল মারা যায় নি। তার আপারেশন সফল হয়েছিল।কিন্তু নীল স্মৃতি শক্তি হারায়। গত দশ বছরের কথা সে ভুলে গিয়েছে।কিছু মনে করতে পারে না। অবনীকেও না।
.
অবনী কান্নায় ফেটে পড়ে।কিন্তু তার কি বা করার আছে?
.
একদিন কোনো এক নির্জন দিনে হঠাৎ নীলের একটা ডায়েরী দেখতে পায় অবনী। ডায়েরীটি পড়তে গিয়ে সে অবাক হয়ে যায়। এই নীলই সেই ছেলে যাকে সে একসময় সবচেয়ে বেশী ঘৃণা করত। কখন ও ভাবে নি। এই সে।
.
আজ থেকে পাঁচ বছর আগে, ভাল বন্ধু থেকে বন্ধুত্বটা ভালবাসায় রুপ নিয়েছিল। কেউ বুঝতে পারতেছিল না, তারা আসলেই ভালবেসেছে কি না! বাস্তবতার ভয়ে তারা নিজের ভালবাসা বাইরে প্রকাশ করতে গিয়েও সরে দাড়িয়েছিল, যেন তাদের মধ্যে কিছুই নেই। Avoid করতে শুরু করেছিল দু'জন দু'জনকে।
ফোন নং টাও নষ্ট করে দিয়েছিল দুজন। তারা ভালবাসাকে বলীদান দিয়ে পরিবারকে বেছে নিতে চেয়েছিল বারবার। আর তাই কেউ কখনই ভালবাসার কথা উচ্চারণও করে নি।
.
কিন্তু মেয়েটিকে আরও অন্যকেউ ভালবাসত।মেয়েটিও ভালোবাসত। তাই মেয়েটির কাছে খারাপ হয়ে ঘৃণার পাত্র হয়েছিল নীল। সে পেরেছিল।
হঠাৎ সে চলে যায় শহর ছেড়ে। আর আসে নি। কেউ তার খোঁজ দিতে পারে নি সে সময়।
.
অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছে। দু'জন দু'জনকে ভুলে গিয়েছে প্রায়।
বড় হয়ে গিয়েছে। কেউ কাউকে চিনতে পারে না। দীর্ঘ পাঁচ বছরে শেষ ও প্রথম দু'বারই দেখা হয়েছিল।
.
দুজনের ভর্তি পরীক্ষা শেষে যে আবার একই জায়গায় চান্স পাবে, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য আবার তারা নতুন করে বন্ধুত্বে জড়িয়ে পড়ে। যা অক্ল্পনীয়।
.
অবনী আর হারাতে চায় নি নীলকে। একবার হারিয়ে ২য়বার সুযোগ দিয়েছে স্রষ্ট্রা। এই সুযোগ হাতছাড়া করা যায় না।
.
অবনী তার পরিবারকে আর নীলের মা-বাবাকে এসব কথা খুলে বলে। নীলকে ছাড়া সে থাকতে পারবে না। অবশেষে নীল-অবনির বিয়ে হয়। তারা সুখী আছে অনেক।অনেক অনেক সুখী।......তাদের একটা মেয়েও হয়েছে। নাম-"পরী"...
.
.
((ভালবাসা যদি সত্যিকারের হয়,তবে পুরো প্রকৃতি তাদের একসংগে করতে লেগে যায়।
তাই ধৈর্য ধরতে হয়। যার সংগে স্রষ্টা যার মিল লেখে রেখেছেন, তাদের আলাদা কেউ করতে পারে না।
কখনোও না।।।কোনো এক বণ্ধন এর অসিলায় তারা কাছে আসবেই।...........))
.
লিখা : TR Nayan bd
#মায়াবন_বিহারিণী
Mar 9

Share this:

CONVERSATION

0 comments:

Post a Comment